গতবছর বাৎসরিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পর দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম । সেই মতো আমি, বাবা, মা এবং আমার ছোটো মামা সবাই মিলে মুকুটমণিপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছিল বাঁকুড়া স্টেশান পর্যন্ত ।হোটেলটা ওখানে গিয়ে বুক করা হয়েছিল। যেদিন বেরোনোর দিন ছিল সেদিন রাতে একটা ট্যাক্সি নিয়ে হাওড়া স্টেশান পৌঁছে গিয়েছিলাম।রাতের হাওড়া স্টেশানে সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল এবং ভালোও লেগেছিল। যথারীতি সময়ে ট্রেন স্টেশানে ঢুকেছিলো। আমরা আমাদের কামরায় উঠে বসেছিলাম। যেহেতু রাতের খাবার খেয়ে বেরিয়ে ছিলাম তাই হালকা খাবার দাবার নিয়ে ছিলাম। ট্রেন যথাসময়ে স্টেশান থেকে ছেড়েছিল। রাতের অন্ধকারের মধ্য দিয়ে ট্রেন ছুটে যাচ্ছিল, তখন আমি মনে মনে কল্পনা করেছিলাম যে ওখানে গিয়ে কোথায় থাকবো, কী কী দেখবো এবং পাহাড় কেমন লাগবে সেইসব।
পরের দিন সকালে বাঁকুড়া স্টেশানে ট্রেন পৌঁছাল। ওখান থেকে একটি গাড়ি বুক করে আমরা মুকুটমণিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এক দেড় ঘন্টার পথ। পথেই একটি দোকানে সকালের জলখাবার খেয়ে নিলাম।তারপর সকাল ১১:৩০ নাগাদ মুকুটমণিপুর পৌঁছালাম। ওখানে লোকাল কিছু দোকান ও লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে একটি হোটেলে উঠলাম। হোটেলটি খুব সুন্দর ছিল ও কাছেই একটি সুন্দর পার্ক ছিল। হোটেলে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়েই একটুখানি বিশ্রাম নিয়ে আমরা ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম। একটি অটো ভাড়া করলাম,প্রথমে ড্যাম দেখতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম একদিকে জল নেই বললেই চলে। আর অপর দিকে জল থৈথৈ করছে। চারিদিক গাছ পালায় সবুজ হয়ে রয়েছে। সে এক মনোরম পরিবেশ । তারপর গিয়েছিলাম নদীর তীরে। সেখানে অনেকে বোটিং করছিল তাই দেখে আমাদেরও ইচহা হয়েছিল । বোটিং করতে করতে আমার খুব মজা লাগছিল কিন্তু এদিকে আবার যখন বোটটা হাওয়ায় দুলে উঠছিল তখন বেশ ভয় ভয় করছিল। তারপর সন্ধ্যার সময় সূর্যাস্ত দেখে সন্ধ্যাবেলা হোটেলে ফিরে এলাম। পরের দিন নদীর ও পারে ডিয়ার পার্কে গিয়েছলাম । কত হরিণ দেখেছিলাম । তাদের পাতা খাওয়ানো গায়ে হাত বোলানো- সে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা । ওখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে শেষমেষ ওখানে একটু দুরে একটি উপত্যকা তে পরেশনাথ মন্দির ছিল। সেখানে গিয়ে মন্দির দর্শন করেছিলাম । ওখানে দু পুরের খাওয়াদাওয়া করে বিকেলে টুকটাক কেনাকাটা করে ফিরে এলাম। পরের দিন ভোরবেলা বাঁকুড়া স্টেশান থেকে ট্রেনে করে হাওড়া ফিরে বাড়ি চলে এলাম। এই বেড়ানোর স্মৃতি সারাজীবন আমার মনে গেঁথে থাকবে।
Leave a Reply Cancel reply
Got a Questions?
Find us on Socials or Contact us and we’ll get back to you as soon as possible.
Leave a Reply