Notun Otithi

- SRIJONI MUKHERJEE, unknown

আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল বাধ ছিল সৃজা,হঠাৎ ঝণ ঝণ …. শব্দ কানে আসতেই বিরক্ত হয়ে পিছন দিক ফিরে তাকায় সে এবং বলে” ওফফ এই তো আদোর করলাম দুষ্টুমি করো না।” সৃজার কাচ্ছে একজন নতুন অতিথি এসেছে অর্থাৎ সৃজার নতুন পোষ্য কিন্তু সে তাকে খোলা রাখতেই পারে না খুল লেই সারা সারা বাড়ি লন্ডভন্ড করবে, তাই সৃজা ওর জন্য একটা খাচা কেনে এবং সে এখন ওখানে থাকে , এএমনিতে সৃজা ওর খেয়াআহা ত্রিজা কিঞল রাখে খেতে দেয় ,কিন্তু আজ বিরক্ত হয়। আজকে অর্ণব এর সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা সৃজার , অর্ণবের সাথে দেখা করতে যাওয়ার আগে সৃজা একটু সময় নিয়ে তৈরি হয়। জামাটা ঠিক আছে তো ?? চুলটা ঠিকঠাক তো ??? অর্ণব কি বোঝো ওর মনের কথা?? ওই মনের মধ্যেই আজ বিরক্তির পারা বারেত থাকে ,সেই বেরোনোর সময় ঢং ঢং শব্দ সৃজার বাড়িটা বেশ বড়, সেই বাড়িটা জুড়ে সে একাই থাকে, ওই বাড়ির একটা ঘরে খাচাটা রয়েছে সেখান থেকেই সেই ঝন ঝন শব্দ ,সেই খাচাটার সামনে গিয়ে বলল “এইতো খেতে দিলাম বাবা আবার কেন শব্দ করছ আমি এখন একটু বেরোচ্ছি শব্দ করোনা নয়তো খুব রেগে যাব”একটা চাপা শব্দ ভেসে এলো, ভয়ের শব্দ না সৃজার পোষ্য সৃজা কে ভয় পায় ।একটা রেস্তোরায় অর্ণব এর সাথে সৃজা দেখা করতে যায় সেই আগে আসে ,হলুদ পাঞ্জাবি এবং জিন্সে বেশ লাগছে অর্ণব কে বেশ লাগছে।আজকে অর্ণবকে একটু বেশি ডিস্টার্ব দেখাচ্ছিল সৃজা অর্ণব কে করে” কি হয়েছে তোর?” অর্ণব বলে পিসির incident টা জানিস তুই, সেই মা বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে কাকার বাড়িতেই থাকে । কেউ যাতে তাকে বোঝা না বলতে পারে আমার পিসি জানিসি চরম স্বাতিক মানুষ, আমাকে সেদিন পুজোর জন্য মিষ্টি আনতে দেয় আমি ভুল করে অনিয়ন ফ্লেভার চিপসের সঙ্গে মিষ্টিটা এনে ফেলি তার জন্য আমাকে প্রচন্ড অপমান করেন ,
এই গল্পটা তোকে তো আগেই বলেছি। সৃজা জিজ্ঞেস করে “হ্যাঁ কিন্তু আবার নতুন করে কি হলো”অর্ণব বলে “আমি যে বাচ্চাটাকে পড়াই নাসেই বাচ্চার বাবা বলেন ‘ও কে এত কঠিন কঠিন অংক করানোর কি দরকার ‘ তোমার ইচ্ছে হয় তুমি কর না আমার ছেলেকে রামানুজন বানানোর কি দরকার ????সৃজা কথাগুলো বলতে দেয় অর্ণবকে তাতে ওর মনের ভাবটা হালকা হয়ে যাবে, শান্ত গলায় সৃজা বলে আসলে তুই অত্যন্ত ভালো রে তাই তোকে সবাই এরকম বলে এই ছাত্রের বাবাকে কিছু বলেছিস?? বলিস নি? জানি তুই বলিস নি অর্ণব বলে” ওরা আমার গুরুজনে। ” কিছু বাজে কথা বলে দিলে ওদের অপমান হবে।সৃজা বলে ওরা তোর মান-সম্মান নিয়ে ফুটবল খেলতে পারে তাইতো?? ছাড় বল তোর পিসির কি খবর??? উনি এখন বাড়ি নেই কদিন আশ্রমে কাটাতে গেছেন।অর্ণব বলে হয়তো এই অপয়ার ছোঁয়া কাটাতে কিছুদিন আরো সময় লাগবে।বলে অর্ণব একটু হাসে।সেই হাসি দেখে সৃজার বুকটা মুচরে ওঠে। আসলে অর্ণব সমস্যাটা হচ্ছে ও নিজে মুখ ফুটে কোনদিন কোন কিছু বলে না। আর এই সুযোগে সবাই ওর মাথায় উঠে নাচে । এই ছাত্রর কথায় যেমন বলা যাক না অর্ণব পড়ানোর আগে ও পাসই করত না, অন্যান্য শিক্ষকরা ওর ওপর হাল ছেড়ে দেয় , আর সেই অর্ণবকে নাকি তার বাবার কাছে এত কথা শুনতে হয় রাগে মাথাটা দবদব করে সৃজার এবং ও তুই নিজেকে কি ভাবিস যে কেউ তোকে ব্যবহার করবে চলে যাবে সৃজা অনেক দিন ভেবেছে অর্ণব কে বলবে শোন তোকে আমি ভালোবাসি এছাড়া আমি আর কারোর সঙ্গে থাকার কথা ভাবতেই পারি না। তুই আমার বাড়িতে এসে থাক,চারপাশে কি কথা উঠল আমার কিছু যায় আসে না কিন্তু ভয় হয় খুব ভয় সে জানে অর্ণব কি বলতে চলেছে ,সারাদিন ঘুরে খেয়ে সিনেমাদেখে বাড়ি ফিরে রাত্রে বিছানায় শুয়ে শুয়ে এই কথাগুলোই ভাবছিল সৃজা আজ ওয়েদারটা একটু ঠান্ডা আছে।কিন্তু ছাত্রের বাবার কথাটা মনে পড়ে যেতে মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে তার ,স্পর্ধা লোকটার অর্ণবকে কিনা অপমান করে আর অর্ণব না থাকলে যে দিনের পর দিন সেটা ফেল করতো তার বেলায় আবার সেই ঢং ঢং শব্দ এই নতুন অতিথি ত বরো ইরিটেটিং এইতো খেতে দিলাম আবার কি হলো জুতোটা গলিয়ে যায় সৃজা খাঁচার কাছেঅর্ণব স্রিজার বাড়িতে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গেই খিদে মেটেনি, সৃজা ভাবলো এবং পাশে সেলফ থেকে একটা প্যাকেট বার করেছে সেখান থেকে কিছু খাবারঅর্ণব স্রিজার বাড়িতে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ে তাকে খেতে দিল।কিছুদিন মুড অফ থাকার পর আবার সিজার মুড অন।আজ অনেকদিন পর অর্ণবের সাথে দেখা হবে আজ একটু আগেভাগেই সৃজা এসে ক্যাফেতে বসে সবকিছুই আগের মতই আছে কিন্তু রিসেন্টলি সৃজা আর একটি পেট নিয়েছে ।আজ সৃজা আগে এসেছিল অর্ণব বেশ কিছুক্ষণ পরে আজ অর্ণব কে বেশ ক্লান্ত দেখায়, সৃজা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোর অর্ণব????অর্ণব বলে যে বাচ্চাটাকে আমি পড়াতাম না তার বাাবা কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।সৃজা বলে কি বলিস রে আবার একটা মিসিং কেস অর্ণব বলে হ্যাঁ মিসেস গুহ ফোন করে জানালেন আর বললেন কদিন পড়াতে আসতে হবে পারলে পুলিশে তদন্ত হেল্প করবেন। আর বলিস না পুলিশের হেনস্তা পোহাতে হলো। সৃজা র চোখে জল সে বলে তোকে এত কিছু সহ্য করতে হলো, আমাকে কিছু বললিও না। আহা সৃজা কী করছিস ।সৃজা চোখ মুছে বলে ছার পরশু তোর জন্মদিন তোকে কিন্তু আসতেই হবে আমি সব ব্যবস্থা করে রাখবো সৃজা খুব যত্ন করে অর্ণবের জন্য ঘর সাজায় বেলুন দিয়ে।এবং অর্ণবের ফেভারিট বাটার স্কচ কেকটা ওর জন্য আনে অর্নবের অত সাধ্যই ছিল না সৃজাকে না করা অর্ণব সৃজার বাাড়িতে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গেই পেলাই মিউজিক সিস্টেমে গান বেজে ওঠে হ্যাপি বার্থডে টু ইউ।সৃজা তার হাতে করে একটা বার্থডে কেক এবং কিছু গিফট নিয়ে আসে নিজে পছন্দ করে জিন্সপাঞ্জাবি শার্ট এইসব কেনে।অর্ণবের এইসব পড়ে কিছুক্ষণ ক্যাটওয়াকও হয় হাসি-ঠাট্টা কেক মাখামাখি সবকিছুই চলে। সৃজা হঠাৎ বলে তোর জন্য আর একটা সারপ্রাইজ আছে। অর্ণব হতবাক হয়ে বলে আবার,সৃজা অর্ণবকে নিয়ে একটি ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায় ।হঠাৎ দরজাটা খুলে দেয় সৃজা।অর্ণব ঘরের সামনে হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ।ঘরে দুটি খাঁচার মধ্যে তার পিসি এবং মিস্টার গুহ অর্ণবের মাথাটা দবদব করে ওঠে যে অনুভূতিটা কখনো অর্ণবের মধ্যে ছিলই না সেটা দেখা দেয় এই অনুভূতি হল রাগের অনুভূতি সৃজার প্রতি ঘেননার অনুভূতি অর্ণব বলে ছিঃ সৃজা ছি এত একটা বড় নোংরা কাজ তুই কি করে করলি সৃজা অর্ণবকে বলে আমি তোকে ভালোবাসি অর্ণব এরা তোকে কষ্ট দিছিলো যে যে তোকে কষ্ট দেবে তার এই হাল হবে ওই দেখ তৃতীয় খাচাটা করে রাখা হয়েছে এরপর যে তোকে কষ্ট দেবে তাকে ওই খাঁচায় রেখে দেবো অর্ণব চিৎকার করে উঠে বলে, তুই তুই দিয়েছিস আমায় কষ্ট সব চেয়ে বেশি কষ্ট। সৃজি আস্তে আস্তে তৃতীয় খাচাটার দিকে ঢুকে যায় এবং বলে আমি তোকে কষ্ট দিতে চাইনি রে অর্ণব সরি।